বাসমাহ স্কুল এন্ড
কালচারাল সেন্টার

স্কুল পরিচিতি

কেন বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার?

বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার মূলত IEYC & IPC ও জাতীয় পাঠ্যক্রমের আলোকে পরিচালিত একটি ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা প্রি-প্রাইমারি এবং প্রাইমারি শিক্ষা প্রদান করে থাকে। আমেরিকান ইসলামিক স্কুলের আদলে গড়ে তোলা এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে রয়েছে অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী, একাডেমিক কাউন্সিলর ও প্রয়োজনীয় সকল অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টারে আমরা প্রত্যেক শিশুর সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করি, পাশাপাশি তার নিজস্ব স্বাতন্ত্র ও সৃজনশীলতা উন্মোচনের জন্য রয়েছে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ। আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম কেবল পাঠ্যবই কেন্দ্রীক নয় বরং শিশুর মানসিক ও সামাজিক বিকাশের জন্য যেসব এক্সট্রা কারিকুলাম একক্টিভির প্রয়োজন রয়েছে তা আমরা আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করি।

আমাদের উদ্দেশ্য

ইসলামী পরিবেশে একাবিংশ শতাব্দির মানোত্তীর্ণ শিক্ষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে আমরা এমন একটি আদর্শ প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাই যারা জ্ঞান, গবেষণা, উদ্ভাবন ও নৈতিকতার অঙ্গনে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকমন্ডলী ও কর্মীরা।

আমাদের লক্ষ্য

শুরুর কথা

বাংলাদেশে শিশু শিক্ষা নিয়ে কাজ করে বহু প্রতিষ্ঠান। কিন্তু শিক্ষার পাশাপাশি জীবনমুখি দক্ষতা ও নৈতিকতার সমন্বয় পাওয়া যায় খুব কম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তাছাড়া শিশুরা বিভিন্নভাবে শেখে। কেউ দেখে শেখে, কেউ পড়ে শেখে আবার কেউ বাস্তবে কাজটি করার মাধ্যমে শেখে। একেক শিশুর শেখার মাধ্যম যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন তাই তাকে শেখানোর জন্য প্রয়োজন মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও শিক্ষার নানা উপকরণ। কিন্তু বাংলাদেশে এ জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই সীমিত। এই সংকটকে উপলব্ধি করে বাসমাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আমেরিকা প্রবাসী জনাব মীর হোসাইন স্যার শিশুশিক্ষা নিয়ে তার দীর্ঘ ২০ বছরের গবেষণাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার।
Brighten a Life, Change the world  এই নীতিবাক্যের উপর ভিত্তি করে শুরু হয়েছে বাসমাহ স্কুলের পথ চলা। আমরা মনে করি, পরিবর্তনশীল বিশ্বের চাহিদা মেটাতে দক্ষতানির্ভর শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য শিক্ষার্থীদেরকে আমরা সেভাবেই গড়ে তুলতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষা শুধু একাডেমিক দক্ষতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শিশুর মধ্যে সহানুভূতি, সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার মতো মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানো শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা শিক্ষার পাশাপাশি এই চারিত্রিক উন্নতি নিশ্চিত করতে চাই।

শিশুশিক্ষা নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি

প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল দেখানোর প্রতিযোগিতার চেয়ে ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার প্রচেষ্টাকে আমরা স্বাগত জানাই। পরিক্ষার খাতায় সুন্দরভাবে উত্তর লিখতে পারা একটি স্বতন্ত্র যোগ্যতা, কিন্তু এটাই যোগ্যতার সবটুকু নয়। তাছাড়া অনেক শিক্ষার্থী ভাল লিখতে পারে না, কিন্তু সুন্দর করে কথা বলতে পারে, বা একটি কাজ দিলে গুছিয়ে করতে পারে। আমরা এ জাতীয় শিক্ষার্থীদেরকেও মেধাবী হিসেবে স্বীকৃতি দেই। যদিও পরিক্ষার খাতায় লিখতে পারাকে আমাদের সমাজে একমাত্র মেধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ফলে অন্যান্য মেধাবীরা অবহেলিত হয় ও তাদের প্রতিভা বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। আমাদের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, নিয়মিত শিক্ষক প্রশিক্ষণ, এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটিস, গ্রæপ ওয়ার্ক, প্রজেক্ট ওয়ার্ক ছাড়াও বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজন রাখা হয়েছে এ জন্য যে আমাদের সকল শিক্ষার্থী যেন তাদের নিজ নিজ মেধা বিকাশের পূর্ণ সুযোগ পায়। একটি শিশু জন্ম নেওয়ার পর একটু একটু করে পৃথিবীকে বুঝতে শুরু করে। কৌতুহলের ডানায় ভর দিয়ে সে অজানাকে জানার চেষ্টা করে। এজন্য কৌতুহল ও জিজ্ঞিাসাকে জ্ঞানার্জনের সহজাত মাধ্যম বলা হয়। বাসমাহ স্কুল শিক্ষার্থীর কৌতুহল ও জিজ্ঞাসাকে স্বাগত জানায়। এখানে শিক্ষকরা মনোযোগী বন্ধুর ভূমিকা পালন করে। শিশু যেন নির্দ্বিধায় যেকোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে সেই পরিবেশ বজায় রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়। বাসমাহ স্কুলে শির্ক্ষাথীরা শিক্ষক ও শিক্ষিকাকে ব্রাদার ও সিস্টার নামে সম্বোধন করে থাকে। এ পদ্ধতির প্রচলনও নেতিবাচক গুরুভীতি দূর করার জন্য করা হয়েছে। আমাদের ক্লাসরুমে শিক্ষকের ভ‚মিকা একজন সহযোগীমাত্র। শেখার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী মূখ্য ভ‚মিকা পালন করবে। শিক্ষক তাকে সহায়তা করবে। শিক্ষক শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু শিক্ষার্থীকে শিখিয়ে দিবে এবং সেখানে শিক্ষার্থীর উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা থাকবে না এমন শিখণপদ্ধতি বাসমাহ স্কুল সমর্থণ করে না। বরং আমরা শিশুর শেখার ক্ষমতার যতেœ বিশ্বাসী। এই প্রক্রিয়ায় শিশুদের নানা রকম প্রশ্নে শিক্ষক মাঝেমধ্যে বিব্রত হলেও ধীরে ধীরে শিশুদের প্রিয় হয়ে ওঠেন। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শেখা ও প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার জন্যে শিশুদের রুটিন মাফিক বিদ্যালয়ের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুর সহজাত কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতা বজায় রাখতে বাসমাহ স্কুল প্রতিটি শিশুর ব্যক্তিত্ব ও স্বকীয়তাকে সম্মান করে। ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, পারিবারিক সংস্কৃতি, আঞ্চলিকতা, মেধার তারতম্য এমনকি কোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতার কারণে শিশুদের মধ্যে কোনো রকম বিভাজন বা বিভেদ সৃষ্টি করা হয় না। আমাদের দেশে শিশুশিক্ষার প্রচলিত নিয়মগুলো সাধারণত শিশুশিক্ষার পরিবেশে এক ধরনের অঢ়ষ্টতা সৃষ্টি করে। আমরা সেটাকে এড়িয়ে চলতে চাই। তাছাড়া আমরা সামাজিক মূল্যবোধের জাগরণ ঘটানোর মাধ্যমে শিশুদেরকে নিয়ম-শৃঙ্খলায় অভ্যস্ত করে তুলতে চাই।

আমাদের 'রূপরেখা'

“প্রতিটি শিশুই একেকটি ফুল।প্রতিটি ফুলই স্বতন্ত্র। তাকে স্বমহিমায় ভাস্বর হতে দাও। তাকে তাঁর মত হয়ে পূর্ণ প্রস্ফুটিত হতে সাহায্য করো।” শিশুরা অল্পতেই আনন্দিত হয়। অপার বিস্ময়বোধ, সীমাহীন কৌতূহল, প্রাণচাঞ্চল্য ও উদ্যম, কারো না কারো মতো হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে বেড়ে ওঠা- এসবই শিশুর সহজাত বৈশিষ্ট্য। ওদের এই বৈশিষ্ট্য বা গুণের ওপর ভিত্তি করেই গ্রহণ করা হয়েছে বাসমাহ স্কুলের শিশুশিক্ষা কার্যক্রম। শিশুর অবিরাম জিজ্ঞাসা, কল্পনা এবং চিন্তাশক্তির প্রতি গভীর মনোযোগ রেখেই সাজানো হয়েছে শিশুশিক্ষা কার্যক্রম পরিকল্পনার প্রতিটি ধাপ। শিক্ষাদর্শনের দিক থেকে অত্যন্ত জরুরি হলো শিশুর মর্যাদা, অধিকার ও দায়িত্বের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া। কিন্তু শিশু যে মর্যাদা পাবার অধিকার রাখে, বয়োজ্যেষ্ঠরা তা প্রায়ই মনে রাখেন না। আমাদের কর্ম-পরিকল্পনায় সব সময় শিশুদের মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের শুরু, গড়ে ওঠা, এগিয়ে চলা- সবই সম্ভব হয়েছে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে শিশুশিক্ষা নিয়ে কাজ করতে করতে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠা, শিক্ষায় নিবেদিতপ্রাণ,  শিশুবান্ধব এবং মানবতার বন্ধু মীর হোসাইন স্যারের হাত ধরে। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচালিত হয় ট্রাস্টি বোর্ড,  প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরিষদ, শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ এই ৩টি পরিষদের প্রত্যক্ষ সংযোগে। শুধু চালিকাশক্তিই নয়, এই ৩টি পরিষদ বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার শিক্ষাদর্শনকে ধারণ ও লালন করে বলেই বাসমাহ স্কুল  আজকের এই বিশ্বমানের শিশুবান্ধব শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন দেখতে পেরেছে।